দ্যা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক

মার্ক জুকারবার্গ
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক থেকে ফেসবুকের স্রষ্টা, আজ ২৬ বছর বয়সী মার্ক জুকারবার্গের এই ক্যারিয়ার অতুলনীয় এবং অভূতপূর্ব৷ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হল ফেসবুক৷ টেলিফোনের উদ্ভাবন যাবৎ আর কোনো আবিষ্কার এভাবে মানুষ কিভাবে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, তার সংজ্ঞাই পাল্টে দেয়নি৷
জুকারবার্গ আজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধনীদের তালিকায় ৩৫তম স্থানে৷ তাঁর সম্পত্তির মূল্য: ৬.৯ বিলিয়ন ডলার৷ অথচ তিনি কিন্তু এখনও প্রায় একটি সাধারণ জীবনই যাপন করছেন৷ তাঁর স্থায়ী বান্ধবী হলেন ডাক্তারির ছাত্রী, হার্ভার্ডেই দু'জনের পরিচয় হয়৷ জুকারবার্গ থাকেন একটি ভাড়া বাড়িতে, যেখানে একটা টেলিভিশন পর্যন্ত নেই৷ একটা গাড়ি আছে বটে, কিন্তু খুব চোখ-ধাঁধাঁনো কি দামী নয়৷
তাঁকে নিয়ে ছবির সংঘাত ও রোমাঞ্চ কিন্তু আসছে তাঁর চরিত্রের অপর কয়েকটি দিক থেকে: জুকারবার্গ যে ফেসবুকের অনেক বৈশিষ্ট্য তাঁর কলেজ জীবনের সঙ্গীসাথীদের কাছ থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করেছেন, এ' অভিযোগ অনেকদিনের৷ এ' নিয়ে আদালতে মামলা হয়েছে এবং বহু অর্থের বিনিময়ে সে সব মামলা চোকানো হয়েছে৷

দ্বিতীয়ত, জুকারবার্গের চরিত্রের নাকি একটি কঠিন, দাম্ভিক দিক আছে৷ তিনি নাকি অন্যদের তখনই গুরুত্ব দেন, যদি তারা তাঁর পরিকল্পনায় কোনো অবদান রাখতে পারে৷ জুকারবার্গ স্বয়ং তাঁকে নিয়ে অননুমোদিত ছবিটি নাকি সহ্য করতে পারেন না৷ অপরদিকে ‘দ্য নিউ ইয়র্কার ম্যাগাজিন'-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জুকারবার্গ বলেছেন: ‘‘আমার ধারণা আমি বড় হয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি৷''

বর্তমানে ফেসবুকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত? ৫০০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে অনেক আগেই এবং প্রতি মুহুর্তেই বাড়ছে এর সংখ্যা। ২০০৪ সালে শুরু হয়ে এই ছয় বছরে এর সাফল্য বিশাল, সুতরাং একে নিয়ে সিনেমা নির্মান হবে এটা হয়তো খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা।
ফেসবুক
‘আমি বেঁচে থাকতেই যেন আমাকে নিয়ে কোনো চলচ্চিত্র তৈরি না হয়।’ ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ এটাই চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আর হলো কই! ১ অক্টোবর মুক্তি পেল ফেসবুক প্রতিষ্ঠার নানা ঘটনা নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক।। জাতে ড্রামা এ ছবির কাছ থেকে আশা করা যায় অনেক কিছূ। কারণ ছবির পরিচালক ডেভিড ফিঞ্চার। তার ফিল্মোগ্রাফির ঝুড়িতে রয়েছে সেভেন,  ফাইট ক্লাব,  প্যানিক রুম,  জোডিয়াক এবং গেল বছরের অস্কার প্রতিদ্বন্দ্বী সিনেমা দ্য কিউরিয়াস কেস অব বেঞ্জামিন বাটন। সিনেমাপ্রেমী মাত্রই জানেন ডেভিড ফিঞ্চার খুব সাধারণ মানের কোন ছবি তাদেরকে উপহার দিবেন না। ফেসবুকের ৫০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর অর্ধেকও যদি ছবিটি দেখতে যান, তবেই তো তা ব্লকবাস্টার হিট হয়ে যাওয়ার কথা। হচ্ছেও তাই। প্রথম সপ্তাহে ছবিটি আয় করেছে প্রায় ২৩ মিলিয়ন ডলার।
undefined
সিনেমার টিজার পোস্টার
‘ইউ ডোন্ট গেট টু ফাইভ হানড্রেড মিলিয়ন ফ্রেন্ডস উইদাউট মেকিং এ ফিউ এনিমিস’ ছবির ট্যাগলাইন এটাই। ২০০৩ সালের এক রাতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমিটরি রুমে মার্ক জুকারবার্গ বসলেন তাঁর কম্পিউটার নিয়ে। চালু হলো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের ওয়েবসাইট ফেসবুক। ২০০৪ সালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু ফেসবুকের। ছয় বছরে ফেসবুক পেল ৫০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী। আর মার্ক জুকারবার্গ বনে গেলেন ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়সী বিলিয়নিয়ার। তবে তাঁর পেছনে রয়েছে প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আর আইনি লড়াইয়ের ইতিহাস। সেটাই দেখানো হয়েছে এই ছবিতে। ডেভিড ফিনচার পরিচালিত এ ছবিতে মার্ক জুকারবার্গের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন জেসি আইজেনবার্গ। গত বছর অ্যাডভেঞ্চার ল্যান্ড, জোম্বি ল্যান্ড ছবি দিয়ে পরিচিতি পেয়েছেন। অন্যান্য ভূমিকায় আছেন অ্যান্ড্রু গারফিল্ড, রুনি মারা, ব্রেন্ডা সং প্রমুখ। সংগীতশিল্পী জাস্টিন টিম্বারলেক অভিনয় করেছেন অনলাইনে গান আদান-প্রদানের ওয়েসাইট ন্যাপস্টারের প্রতিষ্ঠাতার ভূমিকায়।ছবির চিত্রনাট্য রচনার জন্য সাহায্য নেওয়া হয়েছে বেন মেজরিকের লেখা অ্যাক্সিডেন্টাল বিলিয়নিয়ারস বইটি থেকে। ফেসবুক প্রতিষ্ঠার ঘটনা নিয়েই লেখা হয়েছে বইটি। তবে আসল ঘটনা রং-চং মাখিয়ে প্রকাশেরও অভিযোগ আছে লেখকের বিরুদ্ধে। তাই ছবিটা কতখানি বিশ্বাসযোগ্য, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকতেই পারে। হার্ভার্ডের সুন্দরীদের কাছে পাত্তা না পেয়েই জুকারবার্গ চালু করেছিলেন ফেসবুক। বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাও করেছেন। ছবিতে এসব দেখে জুকারবার্গের ভালো না লাগারই কথা। এ জন্যই বোধহয় এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি তাঁর কাছ থেকে। মুখ খুলেছেন ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতাদের একজন ডাস্টিন মস্কোভিটজ। ছবিতে তাঁর চরিত্রটিও আছে। চিত্রনাট্যে মার্ককে বাজেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর চরিত্রের উদ্যমী দিকটা কিন্তু লুকানো যায়নি।
undefined
ডেভিড ফিঞ্চার
সমালোচকেরা অবশ্য বেশ পছন্দই করেছেন ছবিটি। এমনকি অস্কার দৌড়েও এটি সামনের দিকে থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে। দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সিনেমার কাহিনী নেয়া হয়েছে বেন মেজরিকের ২০০৯ সালে প্রকাশিত বই দ্য একসিডেন্টাল বিলিওনেয়ারস থেকে। তবে এই সিনেমার সাথে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ কিংবা অন্য কোন স্টাফ যুক্ত থাকছেন না। অবশ্য বইটি লেখার সময় একজন কো-ফাউন্ডার এর সাথে যুক্ত ছিলেন।
the social network-You Don't Get To 500 Million Friends Without Making A Few Enemies
দ্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক
৪৭ মিলিয়ন ডলার বাজেটের এই মুভিটি মার্ক জুকারবার্গ খুব একটা পছন্দ না করলেও দর্শকরা স্বাভাবিকভাবেই নেবে এমনটি আশা করা যায় কারণ ভেতরের কাহিনী কে না জানতে চায়।

ইউটিউবে অফিসিয়াল ট্রেলার

সূত্রঃ প্রথম আলো, dw এবং সামু

2 comments :

Shahriar Tanvir said...

onek kisu jante parlam, ami google er itihas jante chai, apni ki likben? yahoo, bing ei sob search engine aslo ki vabe? age webdirectory er procholon silo. er facebook er moto social network er jonmo kemon kore suro holo? facebook e ki prothom social networking site? Sunlam RRandi Zuckerberg facebook tag korcen, er karon ki?
http://bosmol.com/2011/08/randi-zuckerberg-is-leaving-facebook-to-start-her-own-company.html
valo likesen facebook nie. english to bujhi na. tai apnake likte bola.

Sam said...

@Shahriar Tanvir Upol ভাই গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন গুলা নিয়ে লেখার ইচ্ছা ছিল আমার, কিন্তু সময়ের অভাবে লিখতে পারি নাই। তবে আপনার জন্য লিখব ইনশাল্লাহ।
আর এই লেখাটা আমার ব্লগের প্রথম দিকের লেখা তাই অনেক কপি পেস্ট করেছি। ছবির পরিচালককে আমার কাছে খুবই চরম লাগে। পুরাই পাগলা টাইপের।